-->

এশিয়া কাপ ২০১৮ এবং আমাদের মাশরাফি


বাংলাদেশের ক্রিকেটের ইতিহাসে মাশরাফি বিন মুর্তজা কৌশিক আজ যে অবস্থানে এসেছেন তার জন্য তার মেধা,প্রতিভা এবং উনার সুন্দর মন সবচেয়ে বড় ভুমিকা রেখেছে । বাংলাদেশের মানুষ যেন আজ মনের আনন্দে আর সত্যিকারের আবেগে অশ্রু ঝরাবার জন্য এক মহামানবের সন্ধান পেয়েছে। এশিয়া কাপ ২১০৮ এর ফাইনাল ম্যাচে অসাধারণ লড়াকু এক নেতা হিসাবে যেন তিনি অত্যন্ত সুনিপুনভাবে আভির্ভুত হয়েছিলেন । তাইতো টাইগার শিবিরে তিনি সকলের 'ভাই' । এই 'ভাই'কে নিয়ে ভক্তকুলের এক অসাধারণ লেখা এখন ফেইসবুকে ভাইরাল । লেখাটি এখানে সংরক্ষণ করতে আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রয়াস । 



#মিরাজ সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠেই টিম হোটেলের ক্যাপ্টেনের রুমে চলে গেলেন!
রুমে ঢুকেই মাশরাফিকে জড়িয়ে ধরলেন। ছোটবেলায় লোল পড়ে যেমন স্যান্ড্রো গেঞ্জির বুক ভিজে থাকতো তেমনি আজও তার টিশার্টের পুরোটা বুক ভিজে আছে। আজ ভিজেছে চোখের পানিতে। নিজের খাটে শুয়ে শুয়ে এতক্ষণ একা একা কেঁদেছেন মিরাজ। আর সহ্য করতে পারছেন না নিজেকেই। দৌড়ে এসে বড় ভাইয়ের রুমে ঢুকেই তাকে জড়িয়ে ধরেছেন।

এর আগে সকালের সূর্য উঠার আগেই এসেছিলেন সারারাত না ঘুমানো মুশফিক, মাহামুদুল্লাহ। এসেই দুজন বসলেন মাশরাফির দু পাশে।  বললেন, ভাই, পারলাম না।  তাদের নত হয়ে থাকা মাথা তুলে দিলেন মাশরাফি। তারা বললেন, ভাই, অন্তত আপনার জন্য হলেও আমাদের পারা উচিত ছিলো। আপনার হাতে একটা ট্রফি তুলে দিতে পারলাম না। ইন্ডিয়ার সাথেই বারবার এমন হয়। আর আমরা দুজনেই ডোবাই টিমরে। মনে হয় আমাদের দিয়া হবে না ভাই। সান্ত্বনা দিলেন না মাশরাফি। তিনি জানেন, এদের দিয়েই হবে।



মুশফিক মাহামুদুল্লাহর পর মাশরাফির দেখা হল লিটনের সাথে। তারা কেউ ব্রেকফাস্ট করতে যান নি। রুম সার্ভিস এসে ব্রেকফাস্ট দিয়ে গেছে সবার রুমে। লিটন এসে বললেন, ভাই খাবেন না? মাশরাফি বললেন, খাবো। তুই যা।
১২১ রান করা লিটন বললেন, ভাই আপনি বড় করতে বলছিলেন। আমি চাইছিলাম বাংলাদেশের সমান বড় করতে। কিন্তু আমি আপনার কথামত বড় করতে পারলাম না ভাই। 

রুম থেকে যাওয়ার সময় লিটনের দিকে তাকিয়ে মাশরাফি মনে মনে বললেন, তুই বড় হবি লিটন। অনেক বড় হবি।

সৌম্য, ইমরুল, মিঠুন ওরা লজ্জায় এলো না ভাইয়ের সামনে। রুবেল আর মুস্তাফিজকে পিঠ চাপড়ে দিয়ে মাশরাফি বললেন, তোদের জন্যই তো টিকাছিলাম। মন খারাপ করস কেন?

অন্যকিছু ভাবতে চাচ্ছেন না মাশরাফি। তবুও মানুষ তো, তাই একবার হলেও মনে হচ্ছে তার, আজ যদি আমার তামিম থাকতো, আমার সাকিব থাকতো। আবার নিজের মনকে নিজেই সান্ত্বনা দিচ্ছেন নিজের কথা দিয়েই, যুদ্ধে নামলে পেছনে ফিরে তাকানোর সুযোগ নাই। এদিকে মিরাজ এখনো পড়ে আছে তার বুকে।

বুক থেকে মিরাজকে টেনে তুলে চোখ মুছে দিলেন মাশরাফি। বললেন, তোরে আরও শক্ত হইতে হবে ছোটো। তোরে নেতা হইতে হবে। একদিন এই টিমটারে তুই লিড দিবি।  মিরাজ বললেন, আমার কিছু লাগবে না ভাই। আমি শুধু আপনারে চাই। আপনার জন্য একটা ট্রফি জিততে চাই।
বলেই আবার জড়িয়ে ধরলেন মাশরাফিকে। চোখের পানি দিয়ে ভিজিয়ে দিলেন মাশরাফির টিশার্ট। মাশরাফি এবার আর মিরাজকে তুললেন না। তাকে কাঁদতে দিলেন। কাঁদলে মন হালকা হয়।

মাশরাফির বুকের মধ্যে লেপ্টে থেকে মিরাজ বুঝলো তার মাথার চুল ভিজে উঠছে। তার মাথার উপর থাকা দুটো চোখ থেকে টপটপ করে পানি পড়ছে। সে চোখজোড়ার দিকে তাকানোর সাহস তার নাই। মাশরাফির বুকের মধ্যে মুখ লাগিয়ে সে শুধু বলল, আপনি কাঁদবেন না মাশরাফি ভাই। আপনি কাঁদলে আমাদের মন খারাপ হয়...

#একদিন হয়ত আমরা কাপ জিতবো। আরও বড় দল হব। কিন্তু সেদিন আর আমাদের এই রূপকথার পাগলটা থাকবে না!
#ফেইসবুক_থেকে_সংগৃহীত। মুল রাইটারের সন্ধান পেলে উনার নাম এখানে যুক্ত করবো ।
Recommendation

Related Posts
Disqus Comments
© Copyright 2018 মাশরাফি সমাচার - All Rights Reserved - Created By Maruf Ahmed Sumon